No Mercy :চলচ্চিত্র পর্যালোচনা

 চলচ্চিত্র নাম: No mercy
ঘরানা: সাইকো থ্রিলার
দেশ : কোরিয়ান
প্রকাশ কাল: ২০১০
দৈর্ঘ্য : ১২৫ মিনিট


আজকে একটু অন্য রকম ভাবে এই পর্যালোচনা করব। কারণ চলচ্চিত্র টা অন্য রকমের একটা প্রতিশোধের গল্প। এই সব চলচ্চিত্র দেখলে মনে হয়,লেখক এবং নির্দেশক কে খুন করে ফেলি। যদি অভিনয় গুলো হয় দক্ষতাপূর্ণ তবে,ওদের হত্যা করাটাও হবে খাবার শেষে কোনো মিষ্টি জিনিস মুখে দেওয়ার মতো। 


অনেক প্রতিশোধ গ্রহণের চলচ্চিত্র দেখেছি কিন্তু No Mercy এর কাছ দিয়ে যাওয়ার মতো কোনো চলচ্চিত্র দেখিনি আজও। কি দেখালো রে বাবা এটা!
একজন ফরেন্সিক অফিসার, যার আর কিছু দিন বাকি অবসর প্রাপ্ত হবার। কিন্তু তার ভেতর একটা কেস আসে হাতে। এই শেষ কেসটা সমাধান করার জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়। জীবনের শেষ কেসটা সমাধান করার জন্য মাঠে নামে ফরেন্সিক অফিসার মিন হো। প্রথম তদন্তেই খুব সহজ ভাবে সন্দেহভাজন কে খুঁজে পেয়ে যায় অফিসাররা। সেই খুনের অপরাধী হচ্ছেন একজন পরিবেশ কর্মী লি সাং হো।যে এই সন্দেহভাজন কে খুঁজে বের করে, সে হল মিন সেই ইয়ং যে কিনা ফরেন্সিক অফিসার মিনের ছাত্র ছিল এক সময়। যে কেসটি নিয়ে মাঠে নামতে হয়,সেখানে একটা বড় ভুলকে ডাকতেই অপরাধী একটা সুন্দর কাজ করে। শরীরের ৬টা অংশকে কেটে নদীর ছয়টা অংশে রেখে দেয়। যার কারণ চলচ্চিত্রর শেষে সহজেই সমাধান হয়। 
তারপর সন্দেহভাজন কে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনো রকম উওর দেয়নি কেউ পুলিশ অফিসারদের কাছে। ফরেন্সিক অফিসার মিন হো,তার মেয়েকে নিতে এয়ারপোর্ট যাচ্ছে। অনেক বছর পর মেয়েকে দেখবে।কিন্তু এয়ারপোর্ট যাওয়ার পরও মেয়ের কোনো খোঁজ নেই। হুট করে একটা ছেলে আসে এবং চিঠি দিয়ে পালিয়ে যায়। চিঠি পেয়েই দৌড়াতে থাকে মিন হো।
কি ছিল সে চিঠিতে? কি সম্পর্ক আর কেন ই বা কিডন্যাপ করা হল মিন হোর মেয়েকে? তারপর কি হল? জানতে চলচ্চিত্র টা দেখুন। আশা করি ভালো লাগবে তবে সেটা একটা রাগ জন্মও দিবে। 


-কেন দেখবেন?

 
সহজ একটা কথা বলি,আজ পযর্ন্ত কোনো চলচ্চিত্রে নায়ক কে, তা বের করতে আশা করি সময় লাগেনি।কিন্তু এই চলচ্চিত্র দেখার পর, মনে হবে, নায়ক ছাড়াও চলচ্চিত্র হয়। জ্বী হ্যাঁ ঠিক শুনছেন। একজনের কাজও তো ভালো হবে? না এখানে নির্দেশক, দুজনকেই টেনে হিঁচড়ে মাটিতে নামিয়ে দিয়েছেন। দেখিয়েছেন,পাপ এবং পাপ'ই। প্রতিশোধ তো প্রতিশোধই হয়। তাই বলে এমন কঠিন প্রতিশোধ? জ্বী হ্যাঁ, এমন কিছু দৃশ্যের সাথে পরিচয় হবেন। যা দেখার পর বলবেন,আমি এই চলচ্চিত্র টা না দেখলেও পারতাম। 


-আমার কথা :-


কোরিয়ানরা থ্রিলার মুভিতে অভিনয় টাকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যায়। আবেগ, যন্ত্রনা এবং শারীরিক আঘাত গুলোকে এমন ভাবে তুলে ধরে,যেন চোখের সামনেই মানুষ গুলো কষ্ট পাচ্ছে। হ্যাঁ তাদের অভিনয় এমনই হয়েছে এই চলচ্চিত্র তেও। ক্যামেরার কিছু শট ছিল,দেখার মতো। মেয়েটির লাশ যখন গোলাপের ঝাড় থেকে জড়িয়ে ধরতে যায় বাবাটি। তখনকার শট টা ছিল দেখার মতো। গল্প টা আমার কাছে একবারেই সেরা। গল্প বলার ধরন এবং উপস্থাপনা দারুন। সাজ সজ্জার কথা আর কি বলব? অসাধারণ ছিল প্রতিটা জিনিসই। মোট কথায় সব কিছু মিলিয়ে ১০/১০ পাওয়ার মতো একটা চলচ্চিত্র। কিন্তু খুব নৃশংস একটা চলচ্চিত্র ছিল। প্রতিশোধ কতটা জঘন্য হতে পারে , তাই বলেছেন নির্দেশক। " ঘৃণা একটা ক্যান্সারের মতো,একটা সময় সেই ঘৃণাই ক্ষমা করার ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয় "এই চলচ্চিত্র দেখার পর এটাই মনে হল আমার। তাই ঘৃণাটাকে যতটা পারেন দূরে রাখুন। মানুষকে ক্ষমা করতে শিখুন। 


গুণমান নির্ধারন:-


আইএমডিবি :-৭.৫

ব্যক্তিগত :-১০/১০ধন্যবাদ।


-নরকীট


Post a Comment

0 Comments