কর্ণপিশাচিনী শব্দটি কি সেটা জানতে হলে আমাদের কয়েকটি মূল বিষয় সম্পর্কে ধারনা থাকা বাঞ্ছনীয়। যেহেতু কর্ণপিশাচিনী তন্ত্রসাধনার বস্তু তাই সাধনা কি বা কেমন সেটার সম্বন্ধে একটা ধারনা থাকা দরকার।
সাধারণভাবে সাধনা বলতে বোঝায় সিদ্ধিলাভ।অর্থাৎ আমাদের অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে যে কাজকর্ম বা ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করতে হয় তাকেই বলে সাধনা।
আর তন্ত্রসাধনা হল বিধিনিষেধ,গুরুবাক্য মেনে নির্দিষ্ট কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজের মনঃপূত বিষয়ে সিদ্ধিলাভ করা।
তন্ত্রসাধনা,সাধনা সাধারণত হিন্দু,বৌদ্ধ ধর্মে প্রচলন রয়েছে। এই কাজটি মূলত শশ্মানে করা হয়ে থাকে।
এই তন্ত্রসাধনা মূলত আসে মনের লোভ লালসা থেকে। অলৌকিক ক্ষমতার লোভ। এই অলৌকিক ক্ষমতা বা লোভের বশবর্তী হয়ে তন্ত্রসাধনার কাজে লিপ্ত হয় হাজার হাজার মানুষ।যার ফল কিন্তু সবসময় শুভ হয় না।ঝুঁকিপূর্ণ কাজ জেনেও অনেকে তন্ত্রসাধনা করতে বসেন বিশেষত পিশাচ বা পিশাচিনীর সাধনা।
এখন জানতে হবে পিশাচ কি?
সাধারণত আমরা পিশাচ শব্দটি ব্যবহার করে থাকি এমন কোনো মানুষের ক্ষেত্রে যে খুব বাজে বা অমানবিক কোনো কাজ করেও আনন্দ লাভ করে।
বিভিন্ন হিন্দু পুরাণ বা আরব পুরাণে পিশাচ বলা হয়েছে এমন কাউকে যে মানুষও না আবার ভূতও নয়।এদেরকে অ-মৃত শ্রেণীর বলা হয়ে থাকে।এরা অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী।পিশাচের বাস অত্যন্ত নোংরা,অপরিষ্কার পরিবেশে যেমন শশ্মানে।
এরা সাধারণত মৃতদেহ,রক্ত ভক্ষণ করে থাকে।বিভিন্ন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্যে হিন্দু সম্প্রদায়ে অনেকে এদের পুজাও করে থাকেন বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে।
এখন আসি মূল আলোচনার বিষয়ে,
কর্ণপিশাচিনী হলেন পিশাচ সম্প্রদায়ের উপদেবী যিনি অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে সব বলে দিতে পারেন,যিনি এই পিশাচিণীর সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছেন।এই পিশাচিনীর বৈশিষ্ট্য হল,তিনি যা কিছু বলবেন সেই সিদ্ধ পুরুষের কানে কানে বলবেন। তাই এর নাম কর্ণপিশাচিনী।
সাধনার পদ্ধতি:
কর্ণপিশাচিনীর সাধনা অনেক কঠিন এবং ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ।যিনি সাধনা করবেন বা করতে চান তাঁকে প্রথমে তার গুরু বা কোনো সিদ্ধ পুরুষের থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং মন্ত্র শিখতে হবে।
এই সাধনার পদ্ধতি অত্যন্ত কঠিন এবং ঘৃণ্যও বলা চলে।যিনি সাধনা করবেন তাঁকে অমাবস্যার রাতে কোনো জনমানবহীন শশ্মানে গিয়ে একুশ দিন একটি গণ্ডির ভেতর কাটাতে হবে।এমনকি মল মূত্র ত্যাগের জন্যেও তিনি সেই গন্ডি থেকে বের হতে পারবেন না।সব ওই গণ্ডির ভেতরেই করতে হবে টানা একুশ দিন।গণ্ডির বাইরে বেরোলেই মৃত্যু নিশ্চিত।
সাধক যখন কর্ণপিশাচিনীর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন তখন তিনি অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে যাই জানতে চাইবেন,কর্ণপিশাচিনী তার উত্তর কানে কানে এসে বলে যাবেন।সেই সাধক তখন হয়ে পড়েন অলৌকিক ক্ষমতাধর এক ব্যক্তি।
তবে দেখা যায় যে অনেকেই একুশদিন পর এই সিদ্ধিলাভে ব্যর্থ হন।কিন্তু তারা তাদের মধ্যে পিশাচকে ধারণ করতে শুরু করেন।ফলে তারা শশ্মানে ছাই ভষ্ম মেখে মৃতদেহর মুণ্ড বা হাড় সঙ্গে নিয়ে পুনঃ পুনঃ বার সাধনা করতে থাকেন সিদ্ধিলাভের আশায়।
মানুষের মনে ক্ষমতা পাওয়ার লোভ মানুষকে কত নীচে নিয়ে যেতে পারে তার প্রমান এই তন্ত্রসাধনা।যদিও এই পিশাচ সাধনার ফল কখনোই কল্যানকর হয় না।কারন পিশাচ সবসময়ই অনিষ্টের পক্ষে।তারা মানুষের মনে লোভ লালসা ঢুকিয়ে সবসময়ই অপরের ক্ষতি করতে কুমন্ত্রনা দেয় তার সাধকের কানে।ফলে সেই সাধক অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হলেও তার দ্বারা কখনোই সমাজের উন্নতি সম্ভব হয় না।
এই সাধনার পদ্ধতি অত্যন্ত কঠিন এবং ঘৃণ্যও বলা চলে।যিনি সাধনা করবেন তাঁকে অমাবস্যার রাতে কোনো জনমানবহীন শশ্মানে গিয়ে একুশ দিন একটি গণ্ডির ভেতর কাটাতে হবে।এমনকি মল মূত্র ত্যাগের জন্যেও তিনি সেই গন্ডি থেকে বের হতে পারবেন না।সব ওই গণ্ডির ভেতরেই করতে হবে টানা একুশ দিন।গণ্ডির বাইরে বেরোলেই মৃত্যু নিশ্চিত।
উপকরণ:
এই সাধনার উপকরণ কাঁচা মাছ,মদ,কাঁচা মাংস এবং রক্ত।যেহেতু পিশাচ বা পিশাচিনী রা এতে সন্তুষ্ট হন।ফলাফল:
একুশ দিন ওই গণ্ডির ভেতর থাকাকালীন সাধকও নিজের মধ্যে পিশাচ কে ধারণ করতে থাকেন।তার গায়ের বর্ণ কয়লার মত কালো হতে থাকে। পিশাচের মত তিনিও ঘৃণ্য পরিবেশে থাকতে ও ঘৃণ্য খাবার খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।একুশ দিন পর সাধক যদি কর্ণপিশাচিনীর সিদ্ধিলাভ করেন তবে তিনি নিজেই তা উপলব্ধি করতে পারবেন।তিনি নিজের কানে ভাসা ভাসা আওয়াজ শুনতে পাবেন যা অন্য আর কেউ পাবেন না এবং কর্ণপিশাচিনী তখন যা চাইবেন কাঁচা মাংস বা রক্ত যা কিছু চাইবেন তাই তাকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিবেদন করতে হবে,তা নাহলে সেই সাধকের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।সাধক যখন কর্ণপিশাচিনীর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন তখন তিনি অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে যাই জানতে চাইবেন,কর্ণপিশাচিনী তার উত্তর কানে কানে এসে বলে যাবেন।সেই সাধক তখন হয়ে পড়েন অলৌকিক ক্ষমতাধর এক ব্যক্তি।
তবে দেখা যায় যে অনেকেই একুশদিন পর এই সিদ্ধিলাভে ব্যর্থ হন।কিন্তু তারা তাদের মধ্যে পিশাচকে ধারণ করতে শুরু করেন।ফলে তারা শশ্মানে ছাই ভষ্ম মেখে মৃতদেহর মুণ্ড বা হাড় সঙ্গে নিয়ে পুনঃ পুনঃ বার সাধনা করতে থাকেন সিদ্ধিলাভের আশায়।
মানুষের মনে ক্ষমতা পাওয়ার লোভ মানুষকে কত নীচে নিয়ে যেতে পারে তার প্রমান এই তন্ত্রসাধনা।যদিও এই পিশাচ সাধনার ফল কখনোই কল্যানকর হয় না।কারন পিশাচ সবসময়ই অনিষ্টের পক্ষে।তারা মানুষের মনে লোভ লালসা ঢুকিয়ে সবসময়ই অপরের ক্ষতি করতে কুমন্ত্রনা দেয় তার সাধকের কানে।ফলে সেই সাধক অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হলেও তার দ্বারা কখনোই সমাজের উন্নতি সম্ভব হয় না।
0 Comments