Article: বই জনরা বা ধরণ নিয়ে আলোচনা

 


বই জনরা আসলে কি:-

আমরা যখন কোনো বই পড়ি বইটি একটি নির্দিষ্ট ভাবের বিষয় কে কেন্দ্র করে লেখা হয়। যেমন ধরুন কোনো বই পড়ে আমাদের ভয়ের উদ্রেক হচ্ছে তাহলে বইটি নির্দিষ্ট ভাবে এই ভয়ের ভাব নিয়েই লেখা। বইটিকে আমরা ভৌতিক বই বলতে পারি। আর এই ব্যাপার টাই হচ্ছে বইয়ের জনরা। 

অর্থ:-

বৃহত্তর অর্থে এই বইয়ের ধরনকে দুভাগে ভাগ করতে পারি। যেটা অবশ্যই বইয়ের প্লট বা বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করবে। একটি হল ফিকশন এবং অপরটি হল নন-ফিকশন।
ফিকশন হল প্রেম রহস্য ক্রাইম এডভেঞ্চর ইত্যাদি ও তার সাথে লেখকের কল্পনার মিশ্রণে তৈরি কোনো গল্প অর্থাৎ বাস্তবের সাথে যার সরাসরি কোনো যোগসূত্র নেই। অপরদিকে নন-ফিকশন হল সত্য বা বাস্তব কোনো ঘটনা কিংবা কোনো চরিত্র কে ভিত্তি করে লেখা গল্প। 

ফিকশন জনরা:-

মূলত বইয়ের বেশিরভাগ জনরা ফিকশন টাইপের মধ্যেই পড়ে। আর এই ধরনের বই পাঠকদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। 

এই ফিকশন জনরার মধ্যে অনেক গুলো প্রধান ভাগ রয়েছে।এই ভাগগুলোর মধ্যেও অনেক উপবিভাগ রয়েছে।মোটামুটি ভাবে প্রধান ভাগগুলো নিয়েই আলোচনা করার চেষ্টা করব।

1. রোমান্টিক:

এই ভাগটিতে মূলত দুজন নায়ক নায়িকার ভালোবাসা ও বিভিন্ন বাঁধা অতিক্রম করে তাদের মিলন এর ঘটনা বর্ণিত থাকে।এর উপবিভাগ গুলো হল - রোম্যান্টিক সাসপেন্স, কনটেম্পোরারি রোম্যান্স, হিস্টোরিকাল রোম্যান্স, এরোটিক রোম্যান্স, ইত্যাদি।

2. ফ্যান্টাসি:

এই ভাগের বিষয়বস্তু মূলত ম্যাজিক কিংবা অতিপ্রাকৃত জিনিস নিয়ে লেখা। লেখকের কল্পনার জগতে এই সমস্ত ম্যাজিকাল ঘটনা বা চরিত্রদের কার্যকলাপ সম্পন্ন হয়। এর উপবিভাগগুলো হল- হার্ড ফ্যান্টাসি, হিস্টরিক্যাল ফ্যান্টাসি, আর্বান ফ্যান্টাসি, প্যারানরমাল ফ্যান্টাসি, হিরোইক ফ্যান্টাসি, ডার্ক ফ্যান্টাসি ইত্যাদি।

3. সাইন্স ফিকশন বা সাই-ফাই:

এই ভাগের প্লট মূলত কল্পবৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে লেখা হয়। যেমন- টাইম ট্রাভেল, স্পেস ট্রাভেল, আলোর চেয়েও তীব্র গতিসম্পন্ন ট্রাভেল, প্যারালাল ইউনিভার্স ইত্যাদি।এর উপবিভাগগুলো হল- স্পেস অপেরা, প্যারালাল ইউনিভার্স, হার্ড সাইন্স, মিলিটারি সাইন্স, এলিয়েন, অলটারনেটিভ হিস্ট্রি ইত্যাদি।

4. হরর বা ভৌতিক:

এই ভাগটির সাথে আমরা ছোটোবেলার থেকেই অল্প বিস্তর পরিচিত। রাক্ষস, দৈত্য দানব, অশরীরি প্রেত আত্মা, অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা, মনসটারদের নিয়ে লেখা কাল্পনিক গল্প। যা পড়লে মানুষের মধ্যে ভয়ের উদ্রেক হয়।এর উপবিভাগগুলো হল- ঘোস্ট স্টোরি, কসমিক, সুপারন্যাচারাল, ভ্যামপায়ার, সাইকোলজিকাল ইত্যাদি। 

5. ক্রাইম:

মূলত অপরাধী ও তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপের অতিরঞ্জিত বর্ণনা করেন লেখক যাতে অবশ্যই মিশে থাকে লেখকের কল্পনা। এর মধ্যে যে উপবিভাগগুলো রয়েছে সেগুলো হল- ডিটেকটিভ ফিকশন, কোর্টরুম ড্রামা, মিস্টেরি ফিকশন ইত্যাদি।

6. এডভেঞ্চর:

এই ভাগের গল্প মূলত কোনো দুর্গম অভিযান নিয়ে লেখা হয় যার সাথে যুক্ত হয় থ্রিলার, বিপদজনক সব ঘটনা আর অবশ্যই লেখকের কল্পনা। উপবিভাগগুলো হল মূলত- লস্ট ওয়ার্লড, মেন'স এডভেঞ্চর, কাল্পনিক সমুদ্রযাত্রা ইত্যাদি।

7. থ্রিলার:

থ্রিলার- এই ভাগের গল্পের মধ্য দিয়ে মূলত রহস্য, উত্তেজনা, উদ্বেগ তৈরি করা হয়। 
এর উপবিভাগ গুলো মূলত- মিস্টেরি, লিগ্যাল থ্রিলার, মেডিকাল থ্রিলার, পলিটিক্যাল থ্রিলার, সাইকোলজিকাল থ্রিলার, টেকনো-থ্রিলার ইত্যাদি।

8. ট্র্যাজেডি:

কাহিনীর মধ্য দিয়ে কোনো চরিত্র, সমাজ, জাতি, সভ্যতার চরম ভোগান্তি ও তার দুঃখজনক পরিনতি দেখানো হয়।
মেলোড্রামা প্রধান হয়ে থাকে এই ভাগে।

নন-ফিকশন জনরা:-

এরপর যেটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে তা হল নন-ফিকশন। এই ভাগের জনরা গুলো হল-

অটোবায়োগ্রাফি
ম্যানুস্ক্রিপ্ট
ঐতিহাসিক সত্য ঘটনা
সত্য অপরাধমূলক ঘটনা
সায়েন্টিফিক বিষয়
ইত্যাদি।

এই সমস্ত ধারার সত্য অথবা বাস্তবে ঘটা কোনো ঘটনা নিয়ে লেখা হয় নন-ফিকশন গল্প বা বই।

এটাই সবটা নয়,
নিজের মত করে স্বল্প পরিসরেই বইয়ের জনরা নিয়ে আলোচনা করলাম।


-শ্রী


Post a Comment

0 Comments