ব্যান্ড-ওয়ারফেজ
গানের নাম: সত্য
অ্যালবাম: সত্য
গানের দৈর্ঘ্য: ৫মিনিট ০৪ সেকেন্ড
প্রকাশকাল: ২০১২
ঘরানা: রক
সদস্য:-
ড্রামস- শেখ মনিরুল আলম টিপু
লিড গিটার- অনি হাসান
বেস গিটার- নাইম হক রজার
কিবোর্ড-গণি
গানের কথন :
এই গানটা ১২ সালের হলেও কিছু দিন আগে হুট করে মাথার ভেতর গুন গুন করতে থাকে এই গানের নিনাদ এবং শব্দগুচ্ছ। তখন আবার ভালো করে শুনতে শুনতে মনে হল গানটা নিয়ে কিছু লেখা দরকার।যা আসলেই এই গানটাকে প্রাপ্য সম্মান দেবে।
গানের পর্যালোচনা সবার জন্য এক রকম হয়না। শুধু মাত্র গীতিকারই জানেন, নির্দিষ্ট কারণ টা। আমরা শ্রোতারা শুধু শুনে নিজের মত করে ভেবে নিতে পারি। তারপরও চেষ্টা করব,যেন একটা নির্দিষ্ট দিক বের করতে পারি। যাতে সবাই এই ভাবনা টার সাথেই নিজেদের একাত্ম করতে পারেন।গানের ভেতর শব্দ গুলোই ছিল সব থেকে কঠিন। যার খুব শক্তিশালী একটা দিক আমরা দেখতে পাই। দশটা শব্দ বলার থেকে একটাই বেছে নিয়ে বলা ভালো। যা আমাদের ভেতরের সব অনুভূতিতেই আঘাত করতে পারে। এই গানের বেলায়,ঠিক এই জিনিসটাই করেছেন এই গীতিকার।শব্দ বাছাই করেছেন খুব সুন্দর ভাবে।
"বেনিয়ার যে নকশায়
পৃথিবী রঙ বদলায়
বিপণন জীবন অবলীলায়…"
বেনিয়ার মানে হল অর্থলিপ্সু ব্যক্তি।যা সমাজের কিছু উঁচু শ্রেণীর মানুষকে ইঙ্গিত করে।যারা নিজেদের জন্য খুব সহজেই অন্যের জীবন কে বিনিময় পণ্য হিসেবে কাজে লাগিয়ে থাকে। যেখানে মানুষ পণ্যের দামের মতো হয়ে যায়।
"গোপনীয় অবক্ষয়, মানবেতর প্রাণের অনুনয়
বিকারী তথ্য সকল বাঁধ ভেঙেছে
সাধারণের ধিক্কার, সাদা মোড়কে লুন্ঠিত সুবিচার"
উঁচু শ্রেনীর মানুষ বলতে আমি কিন্তু শুধু ধনী-ই বুঝাইনি, এখানে রাজনীতির বড় একটা অন্ধকার দিক ফুটে উঠে।রাজনীতির কবলে যেখানে মানবতা ধ্বংস প্রাপ্ত অথবা ধনীরা যেখানে মনুষ্যত্ব বিকারগ্রস্ত সেখানেই অনাহারে থাকা মানুষ গুলোর প্রার্থনা অথবা রাজনীতির কবল থেকে মুক্তির প্রার্থনা।
পরিবর্তনশীল সব কিছুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে সাধারণ মানুষের ধিক্কার।মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে আমাদের সুবিচার। যাকে দেখার,ধরার বা তুলে ধরার কেউ নেই।
এই সব দিয়ে খুব সুন্দর করে, আমাদের সমাজ ব্যবস্থার অসুস্থ কিছু দিক ফুটিয়ে তুলেছেন ব্যান্ডটি। যেমন শক্তিধর শব্দ গুচ্ছ তেমনি আঙ্গুল তোলা দিক গুলো সুবিচার পাক।মানুষ এই গানের মত সুন্দর হোক এবং গীতিকারের বিচার সুবিচার পাক।
বাদ্যযন্ত্র :
এই অ্যালবামটার ১০ টা গানের ভেতর প্রায় ৬ টা গান,(সত্য ছাড়াও) যা ছিল তা সেরা শিল্পকর্ম। সত্যি বলতে কি, আমি তেমনি অন্ধভক্ত না কিন্তু কোনো ব্যান্ডেরই। যখন অনেক আগে শোনা গান মাথায় ঘুরতে থাকে, তখন শুনলে মনে হয় গানটায় কিছু আছে,না হয় এত আগে শোনা গান এমন করে মনে গেঁথে থাকার কথা না।তারপরই ওই সব গান নিয়ে আমি লেখার চেষ্টা করি।
যাই হোক এখন একটু বাদ্যযন্ত্রর দিকে ঘুরে আসি। আগেই বলে নেই,আমি ওনাদের নিয়ে কথা বলার কোনো রকম সাহস দেখাচ্ছি না। যারা ওনাদের গান শুনেন তারা আমার থেকে ভালো জানেন,বাংলা ব্যান্ড শিল্পজগৎ এর জন্য তারা এক একজন রত্ন। সেসব মানুষ নিয়ে আমি কিছু বলছি না,শুধু বলছি গানের কোন দিকটায় কেমন ছিল বাদ্যযন্ত্র গুলোর আকর্ষণ।
ড্রামস: এর কাজ গুলো ছিল একবারে নির্ভুল। যেন গীতিকবিতার সাথে ভালোবাসায় নেমেছে। এক সাথে ধীরে ধীরে আঁকড়ে ধরা তারপর আপনাকেও এক নিবিড় ভালোবাসায় বন্দী করে নিবে।
গিটার: অনি ভাইকে নিয়ে আমার কথা নেই,৩.০৬-৩.৩১ সেকেন্ড পযর্ন্ত শুনেন তারপর নিজেই যা বলার বলবেন।
কিবোর্ড : আহা জাদু ছিল পুরো জাদু।এমন একজন কিবোর্ড বাদক থাকলে আর কি লাগে?
বেস সহ আর মিজান ভাইয়ের কন্ঠ।'সত্য' গানটাকে একটা স্বর্গীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বিশেষ করে শুরুর পর্বটা। আমার কাছে গানটা কিছুটা সুরমধুর ও লেগেছে,বিশেষ করে এমন সুরমধুর গানে মিজা ভাইয়ের কণ্ঠটা ওই রকম একটা অনুভূতি দেয়।তাই সব মিলিয়ে আমি গানটাকে বলব,সেরা, সেরা সেরা একটা গান।
0 Comments